দীর্ঘদিন আলোচনার কেন্দ্রে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামকে আজ (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর গুলশান এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল চলতি বছরের শুরুর দিকে।
দুদকের অনুসন্ধান ও মামলার তথ্য অনুযায়ী, সেলিনা ইসলাম কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন যেগুলোর কোনও বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন, যার মধ্যে মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদকের পরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে সেলিনা ইসলাম অসাধু উপায়ে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন এবং বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
গ্রেফতারের সময় দুদকের একটি বিশেষ দল পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করে। পরে তাকে রাজধানীর রমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়। আগামীকাল (রবিবার) তাকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবীরা।
সেলিনা ইসলাম একসময় জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং দেশের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার স্বামী মো. শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে আগেই দণ্ডিত হন, যা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গ্রেফতার দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। বিশেষ করে, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে সরকারের অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব ধারা প্রযোজ্য হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, এবং দণ্ডবিধির একাধিক ধারা।
দুদক বলছে, এই মামলার মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাব বিবেচনায় না নিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখবে।